-তারা বুখারি শরীফের একটা হাদীস মেনে এমনটা করে থাকেন। হাদীসটা হলো
-সাহল বিন সা‘দ বর্ণনা করেছেন:
= লোকদেরকে আদেশ করা হতো, তারা যেন তাদের ডানহাতকে বাম ‘যিরা‘-এর ওপর রাখে।
-যিরা-মানে কী?
-যিরা-এর একটা অর্থ হলো:
= আঙুল থেকে কনুই পর্যন্ত।
-তাহলে তো হুযুর তারা ঠিক পথেই আছেন।
-বাছা, রসো! হাদীসটার দিকে খেয়াল করে, কী বলা হয়েছে? ডানহাতকে বাম যিরা-এর ওপর রাখতে।
-তো?
-আবরীতে হাত বলা হয়, কাঁধ থেকে আঙুল পর্যন্ত। এখন বলো তো তারা কি আরবী অভিধান অনুযায়ী ডানহাতকে বাম ‘যিরা’-এর ওপর রাখে?
-না তো, তাদেরকে তো দেখি ডান ‘যিরা‘কে বাম ‘যিযা‘-এর ওপর রাখতে?
-তাহলে বোঝা গেল,তারা হাদীসের অর্ধেক মানে, অর্থাৎ বাম যিরা‘এর ওপর রাখে ডানহাতকে।
-কিন্তু হুযুর আপনি তো বললেন আরবীতে ‘ইয়াদুন’ মানে হলো কাঁধ থেকে আঙুল পর্যন্ত!
-ঠিক ধরেছো। তারা হাদীসের বাকী অর্ধেক মানে না। এটা মানা সম্ভবও নয়।
.
আরও কথা আছে। তারা যিরা শব্দটার একটা অর্থ নিয়েই সন্তুষ্ট। অথচ আরেকটা অর্থ আছে:
= কব্জি ও বাহুর মাঝামাঝি জায়গাটকেও ‘যিরা’ বলা হয়। বড় লুগাত খুললেই পাওয়া যাবে।
-এবার তো প্যাঁচ লেগে গেল! যিরা শব্দটা তো একাধিক অর্থ ধারন করে?
-জ্বি।
-তবে তারা কেন একটা অর্থ নিয়েই পড়ে থাকলো?
-শুধু তাই নয়। বুখারী শরীফের বিখ্যাত ভ্যাষ্যকার ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.)-এ হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন:
-এখানে যিরা- শব্দটা মুবহাম বা অস্পষ্ট।
শুধু কি তিনি? আরবের বিখ্যাত মুফতি শায়খ আবদুল্লাহ বিন বাযও বলেছেন:
= এ-হাদীসে যিরা শব্দটা মুবহাম।
মাজমুয়া ফতোয়া খন্ড: ১১। ১২৬ পৃষ্ঠা।
.
-এখন সমাধান কী?
-আমাদেরকে হাদীসটা ভালভাবে বুঝতে হবে। আমরা হাদীস বোঝার জন্যে কী করবো?
-হুযুর আগেই বলেছিলেন: আমরা হাদীস বুঝবো সাহাবায়ে কেরামের মতো করে। দেখতে হবে, এ-ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের সুস্পষ্ট কোনও আমল আছে কি না!
-আছে কি?
-আলবৎ আছে। শুধু আছে নয়, বুখারী শরীফেই আছে।
-কোথায়?
- ১১৯৮ নাম্বার হাদীস
= আলী (রা.) তার ডানহাতের তালুকে বাম হাতের কব্জির ওপর রেখেছেন।
- আশ্চয তো! তারা দেখছি বুখারি শরীফও পুরোপুরি মানে না।
---------------------
এটা কোনও ব্যাপক গবেষণাধর্মী কিছু নয়। এটা স্রেফ আমি প্রাথমিক কিছু বিষয় জানার জন্যে লিখছি।
--------------------
#আলাপআলোচনাসংলাপAtikUllahAtik