যে ভাবে শুরু হয় বাংলাদেশে ইসলামের সূচনা....

যে ভাবে শুরু হয় বাংলাদেশে ইসলামের সূচনা....
বাংলাদেশে ইসলামের সূচনার সময় নির্ধারণ করতে গিয়ে ইতিহাসবিদরা বিভিন্ন মত ব্যক্ত করে থাকেন। অনেকের মতে ১২০৩/১২০৪ খ্রিস্টাব্দে উপমহাদেশ দাপিয়ে বেড়ানো আফগানিস্তানের প্রতাপশালী মুসলিম শাসক ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজির শাসনকাল থেকে বাংলাদেশে ইসলামের সূচনা হয়। তবে ইতিহাসের বিভিন্ন প্রত্মতাত্মিক নিদর্শন আমাদের নতুন করে ভাবাতে আরম্ভ করেছে। বহুসংখ্যক আলামতের ভিত্তিতে এ কথা প্রমাণিত হয়, সাহাবাদের সময় থেকেই আমাদের বাংলাদেশে ইসলামের আগমন শুরু হয়। আরবের দায়িরা দ্বীনের দাওয়াতের স্বার্থে ব্যবসার কাফেলা নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়েছেন। সেই সময় থেকেই বাংলাদেশে ইসলামের সূচনা হয়।

‘জাতীয় অধ্যাপক’ দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফের মতে, হজরত ওমর রা. এর শাসনামলে মামুন, মুহাইমেন রা. নামক সাহাবিদ্বয় বাংলাদেশে আগমন করেন। বিশিষ্ট সাহাবি আবু ওয়াক্কাস রা. ৩য় হি. (৬২৬ খ্রি.) ইসলাম প্রচারের জন্য চীন যাওয়ার পথে কিছুকাল রংপুর এলাকায় অবস্থান করে ইসলাম প্রচার করেন, বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বিষয়টির পক্ষে জোড়ালো প্রমাণ উপস্থান করা যায়। উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম রংপুরের ৪৮ কিমি দূরে লালমনিরহাট জেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের বড়বাড়িতে রামদাস মৌজার মসতার পাড় নামক স্থানে এক অভূতপূর্ব গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শন পাওয়া গেছে, যা ৬৯ হিজরিতে (আনুমানিক ৬৯২ খ্রি.)  নির্মিত একটি মসজিদ। এই মসতার পাড় স্থানটি বহুকাল ধরে ৭/৮টি উঁচু মাটির টিলা ও জঙ্গল দ্বারা আবৃত ছিল। যার স্থানীয় নাম ‘মজদের আড়া’। স্থানীয় ভাষায় ‘আড়া’ অর্থ জঙ্গলময় স্থান। এতোদিন কেউ হিংস্র জীবজন্তু, সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে ভেতরে প্রবেশ করার সাহস পেত না। ১৯৮৭ সালে জমির মালিক তা আবাদযোগ্য করার চিন্তা করে জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে প্রাচীনকালের তৈরি ইট, যাতে আঁকা ছিল ফুল। আর মাটি ও ইট সরাতে সরাতে আশ্চর্যজনকভাবে পূর্ণ একটি মসজিদের ভিত খুঁজে পাওয়া গেল।

এর মধ্যে ৬̋ ৬̋ ২̋ সাইজের একটি শিলালিপি পাওয়া যায়, যার মধ্যে স্পষ্টাক্ষারে আরবিতে লেখা আছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ, হিজরি ৬৯ সাল। খননকাজে বিস্ময় বাড়তে থাকে। আরও খননের পর মসজিদের মেহরাব এবং মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠ ও ইমাম সাহেব যে স্থানে খুৎবা পাঠ করতেন, তাও আবিষ্কৃত হয়। তখন থেকেই এলাকার লোকজন এ স্থানে টিন দিয়ে একটি সাধারণ ছোটোখাট মসজিদ তৈরি করে নামাজ পড়ে থাকেন। তারা  মসজিদটির নাম দিয়েছেন ‘হারানো মসজিদ’। তাই এটা বলা যেতে পারে, আরব থেকে আগত মুসলমানÑ যারা ৬৯ হিজরিতে এ এলাকায় বসবাস করেছিলেন এবং নিজেদের ধর্মীয় প্রয়োজনে মসজিদও তৈরি করে ছিলেন। সেই থেকেই বাংলাদেশে ইসলামের প্রচারের কাজ আরম্ভ হয়।

এদিকে অষ্টম হিজরিতে ক্যান্টন থেকে চীনের রাজা তাইশাং হজরত আবু কাবশার রা. মারফত ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও সাহাবায়ে কেরাম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসেছিলেন। গুজরাটের  রাজা ভোজের কাছে সাহাবায়ে কেরাম এসেছিলেন। ক্যারালার রাজা চেরুমল-পেরুমলও সাহাবাদের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, একথা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। কাজেই সেদিক থেকে বিচার করলে ৬৯ হিজরিতে বাংলাদেশে ইসলামের প্রসার শুরু হওয়া বিচিত্র ঘটনা নয়।

এই নিদর্শন পাওয়ার পূর্বে ধারণা করা হতো, শুধুমাত্র বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলেই প্রাচীনকালে আরবদের আগমন ঘটেছিল এবং তা খুব বেশি অতীত হলে খ্রিস্টিয় অষ্টম বা নবম শতকে। কিন্তু লালমনিরহাটে আবিষ্কৃত ৬৯ হিজরির (আনুমানিক ৬৯২ খ্রি.) ‘হারানো মসজিদ’ তার জাজ্বল্যমান প্রমাণ নিয়ে সে ধারণাকে নতুনভাবে বিশ্লেষণের দাবি জানাচ্ছে।

বিচ্ছিন্নভাবে ৬৯ হিজরির আগেও বাংলাদেশে ইসলাম আগমনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ৬১৭ খ্রি. ১৪ রজব বৃহস্পতিবার প্রিয়নবী সা. আঙুলের ইশারায় চাঁদ দু’ভাগ হতে দেখে ‘রাজাভোজ’ মুসলমান হয়ে আবদুল্লাহ নাম ধারণ করেন এবং তিনিই ভারতীয় সর্বপ্রথম মুসলমান। এতে বোঝা যায় প্রিয়নবী সা. জীবদ্দশায় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হয়। অন্যদিকে বিবি খাদিজার রা. বাণিজ্যিক জাহাজ চট্টগ্রামে নোঙর ফেলেছিল এবং দক্ষিণ আরবের ‘সাবা’ জাতি ঢাকার অদূরে বসতি গড়লে তার নাম হয়ে যায় সাভার। ঠিক তখন থেকেই বাংলাদেশে আরবদের আগমন শুরু হয় এবং তাদের মাধ্যমেই ইসলামের সূচনা হয়। তবে তখন ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচার হয়নি। পরবর্তীতে ১২০৩-০৪ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ের পর থেকেই ব্যাপকভাবে ইসলামের প্রচার ও প্রসার আরম্ভ হয়। - 
মূল আর্টিকেল:  https://bit.ly/2MOZxT7

পর্দা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মুসলমানদের জন্য অবমাননাকর: জমিয়ত

পর্দা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মুসলমানদের জন্য অবমাননাকর: জমিয়ত
ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারীদের বাইরে চলাচলের সময় হাত-পা মোজা পরা ও চেহারা ঢাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার ও আল্লাহর কাছে তাওবা করার আহ্বান জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ (১২ জুন) বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে দলটির সভাপতি আল্লামা আব্দুল মুমিন শায়েখে ইমামবাড়ি ও মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, গত (৯ জুন) রবিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে মুসলিম নারীদের পর্দার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “হাত মোজা পা মোজা নাক-চোখ ডাইকা একেবারে এটা কি? জীবন্ত টেন্ট (তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটার তো কোন মানে হয় না”।
জমিয়ত সভাপতি ও মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর হয়েছে। এই বক্তব্যে ইসলামের অপরিহার্য বিধান পর্দাকে খুব বাজেভাবে কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে এমন বক্তব্যে দেশের ৯২ ভাগ মুসলমান মানসিকভাবে আহতবোধ ও হতাশ হয়েছেন। এই বক্তব্যের ফলে পর্দা নিয়ে ইসলামবিদ্বেষীরা ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারীদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হেয়প্রতিপন্ন করতে নতুনভাবে উৎসাহিত এবং পর্দানশীন নারীদের চলাচলে হয়রানী ও হেনস্থা বেড়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
বিবৃতিতে জমিয়ত নেতৃদ্বয় আরো বলেন, জনসমক্ষে চলাচলের ক্ষেত্রে শরীর আবৃত রাখা মুসলিম নারীদের জন্য ইসলামের অপরিহার্য বিধান তথা ফরয। পবিত্র কুরআনের স্পষ্ট আয়াতের আলোকেই মুসলিম নারীগণ বোরকা, নেকাব ও হাত-পা মোজা পরে শরীর ও চেহারা ঢেকে বাইরের প্রয়োজনীয় কাজ সারেন।
তারা বলেন, পর্দা ও হিজাবকে নিয়ে এমন কটাক্ষপূর্ণ বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ধর্মীয় প্রশ্ন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী দেশের নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনাচার নিয়েও কোনরকম কটাক্ষ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য দিতে পারেন না। তাঁর এই বক্তব্য সংবিধান, মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারবিরোধী হয়েছে।
জমিয়ত সভাপতি ও মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধানে দেশের প্রতিটি নাগরিককে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। একজন মুসলিম নারী ধর্মীয় স্বাধীনতার এই অধিকার বলেও স্বাচ্ছন্দে পর্দা করে চলাচলের অধিকার রাখেন। এটাকে কটাক্ষ করার আইনী অধিকার কারোর নেই।
জমিয়ত নেতৃদ্বয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পবিত্র কুরআনের পর্দার বিধানের প্রতি অবমাননাকর তার এই বক্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক মহান আল্লাহর দরবারে তাওবা এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
মূল আর্টিকেল:https://bit.ly/2MP5u2i

পর্দায় মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ-ইহুদী নারী লায়লা হুসাইন :

পর্দায়  মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ-ইহুদী নারী লায়লা হুসাইন :

ইসলামের আলোকিত বিধি-বিধান, বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং নানা প্রথা যুগ যুগ ধরে সত্য-সন্ধানী বহু অমুসলিম চিন্তাশীল মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। যেমন, জ্ঞান-চর্চার ওপর ইসলামের ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ অনেক অমুসলিম গবেষককে অভিভূত করেছে। ইসলামী হিজাব বা শালীন পোশাক তথা পর্দার বিধানও আকৃষ্ট করে আসছে অমুসলিম নারী সমাজকে। ফরাসি নারী লায়লা হোসাইনও ওদের মধ্যে একজন।
পাশ্চাত্যের বঞ্চিত ও প্রতারিত নারী সমাজ ইসলামী শালীন পোশাকের মধ্যে প্রশান্তি, নিরাপত্তা ও পবিত্রতা খুঁজে পাচ্ছেন। পাশ্চাত্যের অনেক নারীই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তারা এই পশ্চিমা ভুবনে মুসলিম মহিলাদের হিজাব দেখেই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়েছেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তারা বলেছেন, আমরা হিজাবের মধ্যে সত্যিকারের সুখ, প্রশান্তি ও নিরাপত্তা অনুভব করছি। ইসলামী হিজাবের এই প্রভাবের কারণে পশ্চিমা সরকারগুলো নানা অজুহাতে হিজাব পরিহিতা নারীদের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। এ ছাড়াও এসব সরকার পর্দানশীন নারীদেরকে একঘরে করার ও দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
ফরাসি নও-মুসলিম লায়লা হোসাইন ছিলেন একজন ইহুদি। টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, হিজাবের সৌন্দর্য দেখেই তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং বেছে নিয়েছেন পরিপূর্ণ হিজাব।
লায়লা হোসাইন বলেছেন, ‘মুসলমানদের সম্পর্কে সব সময়ই এক ধরনের বীতশ্রদ্ধ ছিলাম আমি। আমি এভাবেই বড় হয়েছি। কিন্তু আমি সব সময়ই হিজাব পরা মুসলিম নারীদের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম। তাদের পবিত্রতা ও বিনম্রতা আমাকে মুগ্ধ করত’।
‘আমার দৃষ্টিতে তাদের রয়েছে এক ধরনের নিজস্ব সৌন্দর্য। আমি ইহুদি সমাজের সদস্য হওয়ায় ইসলামী হিজাব রপ্ত বা আয়ত্ত করা আমার জন্য কঠিন কাজ ছিল না। কিন্তু ঈমান বা বিশ্বাস সম্পর্কে মানুষের ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। তারা (অর্থাৎ ইহুদিরা) মুসলিম মহিলাদের চেয়ে ইহুদি মহিলাদেরকেই বেশি শ্রদ্ধা করত।’
ইসলামের অন্য অনেক সৌন্দর্য গবেষণার মাধ্যমে স্পষ্ট হয় লায়লা হোসাইনের কাছে। পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধিতে তাকে সহায়তা করেছে। তিনি বলেছেন, ‘কোরআন ছিল আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ আমি পেয়েছি তা থেকে বুঝতে পেরেছি যে, ইসলাম সত্য ও খাঁটি ধর্ম।
কারণ, এ ধর্ম সব নবী-রাসূলকেই শ্রদ্ধা করে। আর আমার দৃষ্টিতেও এটা খুবই যৌক্তিক। ধীরে ধীরে আমার কাছে এটা স্পষ্ট হয় যে ইসলামের শুধু বাহ্যিক দিক নয়, আছে অভ্যন্তরীণ দিকও। তাই ভেতর থেকেও ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।’
ইসলামে মানুষের আত্মা ও দেহ- উভয়ই গুরুত্ব পেয়েছে। প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য ইসলামী বিশ্বাসের শুধু মৌখিক স্বীকৃতি ও বাহ্যিক আচার-আচরণ বা ইবাদতই যথেষ্ট নয়। মন বা হৃদয়ের গভীরে ইসলাম কতটা স্থান করে নিয়েছে-লায়লা হোসাইনের মতে তাও গুরুত্বপূর্ণ।
পশ্চিমা সরকারগুলো ইসলাম সম্পর্কে সঠিক চিত্র তুলে না ধরায় নও-মুসলিমরা অনেক সমস্যার শিকার হন। কিন্তু ইসলামের সৌন্দর্য ও বাস্তবতা নওমুসলিমদের কাছে এতই হৃদয়গ্রাহী যে সব ধরনের কঠোরতা, ক্লেশ ও বাধা-বিঘ্ন সহ্য করা তাদের জন্য সহজ হয়ে পড়ে।
লায়লা হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘হিজাব পরার মাধ্যমে আমি নিজেকে অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছি-এই ভেবে আমার পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কারণ, ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ। স্কার্ফ বা ওড়না মাথায় দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যাওয়া এ দেশে নিষিদ্ধ, ফলে হিজাবধারীকে সামাজিক অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হয়। শুধু বিশেষ পোশাক পরার কারণে আমি আমার সামাজিক জীবনকে বিপদাপন্ন করেছি বলে আমার পরিবার মনে করত। এ অবস্থা মেনে নেয়া তাদের জন্য খুবই কষ্টকর ছিল।’
‘তারা মনে করত আমি আমার মুসলমান হওয়ার বিষয়টি হিজাবের মাধ্যমে প্রকাশ না করলেই ভাল হত। ইসলামের প্রতি আমার বিশ্বাস কেবল মনের মধ্যে লালন করলেই তা যথেষ্ট হত বলে তারা মনে করত। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
‘কারণ, পবিত্র কোরআনে ও রাসূল (সা.)’র অনেক হাদিসে বা সুন্নাতে হিজাবের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মুসলিম পরিচয়ের জন্যেও যে তা জরুরি তা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছ কোরআন-হাদিসে। তাই হিজাব পরিত্যাগ করতে রাজি হইনি আমি। আমার কাছে হিজাব শুধু হাত ও মাথা ঢাকার বিষয় নয়, বরং এর চেয়েও বড় কিছু।’
ইসলামের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে অনেক ইহুদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। এ ধরনের ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে। কিন্তু বর্তমান যুগে প্রচলিত ইহুদি ধর্ম (যা আসলে আদি বা অকৃত্রিম ইহুদি ধর্ম নয়) অনুযায়ী এ ধর্ম ত্যাগ করা যায় না। ফলে নও-মুসলিম ইহুদিরা অনেক সমস্যার শিকার হচ্ছেন।
তাসুয়ি ইহুদা লাভ নামের একজন ইহুদি পুরোহিত বলেছেন, ইহুদির মেয়েরা অন্য ধর্ম গ্রহণের পরও ইহুদি থেকে যায়। কারণ, ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী, ইহুদি মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া ইহুদি অন্য ধর্ম গ্রহণ করার পরও ইহুদি থেকে যায়।
এ ছাড়াও বিশ্বের ইহুদিদের অভিভাবক হওয়ার দাবিদার দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের বাইরে ইহুদিদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ঠেকানোর জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নিয়েছে।
তা সত্ত্বেও ইসরাইলি দৈনিক মারিভ সম্প্রতি লিখেছে, ‘ইসরাইলের ভেতরেই প্রতি বছর শত শত ইহুদি নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মীয় পরিচয় পরিবর্তনের ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য ইসরাইলি বিচার-বিভাগের কাছে আবেদন জানাচ্ছে। ইসরাইলি ইহুদিদের মধ্যে এ ধরনের আবেদনের সংখ্যা ২০০৮ সালে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।’
‘আবার অনেক ইহুদি ধর্ম পরিবর্তন সংক্রান্ত এ ধরনের আবেদন করছেন না, কিংবা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে গেলে যেসব সীমাবদ্ধতা ও হয়রানির শিকার হতে হবে তা এড়ানোর জন্য এ পবিত্র ধর্ম গ্রহণের কথা প্রকাশ করছেন না।’
গবেষণায় দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতা এবং ইহুদিবাদীদের হাতে তাদের সম্পদ দখল ও লুণ্ঠনের ঘটনাগুলো অধিকৃত ফিলিস্তিনে আসা ইহুদিদেরকে বিকৃত হয়ে পড়া ইহুদি ধর্ম ত্যাগের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
ইহুদিদের মধ্যে অন্য ধর্ম গ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকায়, বিশেষ করে ইসলামের আকর্ষণ তাদের মাঝে বাড়তে থাকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল অ-ইহুদি বিয়ে করাকে ইহুদি যুব সমাজের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। অ-ইহুদি স্বামী বা স্ত্রীর প্রভাবে ইহুদি যুব সমাজ নিজ ধর্ম ত্যাগ করছে বলেই ইসরাইল তা ঠেকাতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইহুদিবাদী রাজনৈতিক নেতা আভরি আভরবাখ বলেছেন, প্রত্যেক ইহুদির নিজ ধর্ম ত্যাগের ঘটনা ইহুদি গ্রুপগুলোর জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক ক্ষতি বয়ে আনছে।
কিন্তু লায়লা হোসাইনের মতে, সত্য ধর্ম তার স্বচ্ছতা ও স্পষ্ট নানা শিক্ষার কারণেই মানুষের অন্তর জয় করছে এবং জীবন, ভালবাসা ও বিশ্বাসের প্রকৃত অর্থ তুলে ধরছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা তাদের মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।’
মূল আর্টিকেল: https://bit.ly/2WDfefB
সূত্র – Revert stories: journey to Islam

হযরত সোলায়মান (আঃ) ও পিপীলিকার ঘটনা

হযরত সোলায়মান (আঃ) ও পিপীলিকার ঘটনা

হযরত সোলায়মান (আঃ) পিপীলিকার ঘটনা 

হযরত সোলায়মান (আঃ) এর সেনাবাহিনী জ্বিন ও মানবকুল সমন্বয়ে গঠিত ছিলঅন্যান্য জীবকুলও তাঁর সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভূক্ত ছিলএত বিশাল বাহিনী থাকা সত্ত্বেও কোন প্রকার বিশৃংখলা/অনিয়ম হত না, বিশৃংখলা পরিস্থিতি সৃষ্টির সাহসও কেউ করতে পরতো নানিয়ম অনুযায়ী সবারই স্থান নির্ধারিত ছিলনির্ধারিত স্থানে সারিবদ্ধ হওয়া ব্যতিরেকে কোন বাহিনীই অগ্রসর হতে সাহস পেত নাঅটুট শৃংখলা সম্পন্ন এ বিশাল বাহিনী নিয়ে পথ চলতেন।
হযরত সুলায়মান (আঃ) একদা তাঁর বিশাল সেনাবাহিনী সহ একটি এলাকা অতিক্রম করছিলেনঐ সময় তাঁর সাথে জিন, মানুষ পক্ষীকুল ছিলযে এলাকা দিয়ে তাঁরা যাচ্ছিলেন সে এলাকায় বালির ঢিবি সদৃশ পিপীলিকাদের বহু বসতঘর ছিলসুলায়মান বাহিনীকে আসতে দেখে পিপীলিকাদের সর্দার তাদেরকে বলল, তোমরা শীঘ্র পালাওনইলে পাদপিষ্ট হয়ে শেষ হয়ে যাবেসুলায়মান (আঃ) পিপীলিকাদের এই বক্তব্য শুনতে পেলেনএ বিষয়ে কুরআনী বর্ণনা নিম্নরূপ:
وَوَرِثَ سُلَيْمَانُ دَاوُودَ وَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ عُلِّمْنَا مَنطِقَ الطَّيْرِ وَأُوتِينَا مِن كُلِّ شَيْءٍ إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْفَضْلُ الْمُبِينُ- وَحُشِرَ لِسُلَيْمَانَ جُنُودُهُ مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ وَالطَّيْرِ فَهُمْ يُوزَعُونَ- حَتَّى إِذَا أَتَوْا عَلَى وَادِي النَّمْلِ قَالَتْ نَمْلَةٌ يَا أَيُّهَا النَّمْلُ ادْخُلُوا مَسَاكِنَكُمْ لاَ يَحْطِمَنَّكُمْ سُلَيْمَانُ وَجُنُودُهُ وَهُمْ لاَ يَشْعُرُونَ- فَتَبَسَّمَ ضَاحِكاً مِّن قَوْلِهَا وَقَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحاً تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ- (نمل ১৬-১৯)-
সুলায়মান দাঊদের স্থলাভিষিক্ত হল এবং বলল, হে লোক সকল! আমাদেরকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে এবং আমাদেরকে সবকিছু দেওয়া হয়েছেনিশ্চয়ই এটি একটি সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব’ (নমল ১৬)অতঃপর সুলায়মানের সম্মুখে তার সোনাবাহিনীকে সমবেত করা হল জিন, মানুষ ও পক্ষীকুলকেতারপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যুহে বিভক্ত করা হ’ (১৭)অতঃপর যখন তারা একটি পিপীলিকা অধ্যুষিত এলাকায় উপনীত হ, তখন এক পিপীলিকা বলল, ‘হে পিপীলিকা দল! তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ করঅন্যথায় সুলায়মান ও তার বাহিনী অজ্ঞাতসারে তোমদেরকে পিষ্ট করে ফেলবে’ (১৮)তার কথা শুনে সুলায়মান মুচকি হাসল এবং বলল, ‘হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমাকে ক্ষমতা দাও, যেন আমি তোমার নেমতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পসন্দনীয় সৎকর্মাদি করতে পারি এবং তুমি আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর’ (নমল ২৭/১৬-১৯)
উপরোক্ত আয়াতগুলিতে প্রমাণিত হয় যে, সুলায়মান (আঃ) কেবল পাখির ভাষা নয়, বরং সকল জীবজন্তু এমনকি ক্ষুদ্র পিঁপড়ার কথাও বুঝতেনএজন্য তিনি মোটেই গর্ববোধ না করে বরং আল্লাহর অনুগ্রহের প্রতি শুকরিয়া আদায় করেন এবং নিজেকে যাতে আল্লাহ অন্যান্য সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করেন সে প্রার্থনা করেনএখানে আরেকটি বিষয় প্রমাণিত হয় যে, তিনি কেবল জিন-ইনসানের নয় বরং তাঁর সময়কার সকল জীবজন্তুরও নবী ছিলেনতাঁর নবুঅতকে সবাই স্বীকার করত এবং সকলে তাঁর প্রতি আনুগত্য পোষণ করতযদিও জিন ও ইনসান ব্যতীত অন্য প্রাণী শরীআত পালনের হকদার নয়


আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ভাইরাস মুক্ত আছে কি?

আপনার  অ্যান্ড্রয়েড ফোন ভাইরাস মুক্ত আছে কি?
অনলাইন ডেস্ক: অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে। জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে এর সিকিউরিটিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নিয়মিত সিকিউরিটি প্যাচ আপডেট এবং প্লে প্রটেক্ট এর মতো ফিচার ব্যবহার করে গুগল কোনো ভাইরাস আক্রান্ত অ্যাপ্লিকেশান বা “Bug” এর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
যদিও এত সুরক্ষার পরেও সামান্য আশঙ্কা থেকেই যায় যে ভুলবশত কোন ভাইরাস ইনফেক্টেড অ্যাপ্লিকেশানকে ডাউনলোড করে ফেলার। গুগল এর দেওয়া যে সার্ভিস গুলোর কথা বললাম সেগুলো ছাড়া প্লে স্টোরে অসংখ্য অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ্লিকেশান পাওয়া যায়।
কিন্তু আসল সমস্যাটা আমাদের সামনে তখনই হবে যখন আগে থেকেই আমাদের ব্যবহার করা ডিভাইস ভাইরাস আক্রান্ত থাকবে। যদি ব্যবহারকারী দেখে যে তার ফোনে প্রচুর বিজ্ঞাপন আসছে, বা ফোনে রাখা তথ্য কোরাপ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফোন হঠাৎ হঠাৎ স্লো হয়ে যাচ্ছে ।
তখন ব্যবহারকারী কে বুঝতে হবে যে ফোনে ভাইরাস এর আক্রমণ হয়েছে। এইরকম পরিস্থিতি তে পড়লে কিভাবে তা ঠিক করতে হবে সেই কথাই এইবারে বলবো ।
১) প্রথমে আপনার স্মার্টফোনটি সেফ মোড়ে রিবট করুন । এটি করতে হলে আপনার ডিভাইস এর ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন একসাথে প্রেস করুন।( আলাদা আলাদা সেট এর ক্ষেত্রে এটি আলাদা হয়) বুটলোডার ওপেন করার পর রিস্টার্ট ইন সেফ মড অপশনটি বেছে নিন।
২) ফোনটি সেফ মোডে অন হলে পর সেটিংস এ যান তারপর অ্যাপ্লিকেশানে ক্লিক করুন ।
৩) যে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশান ইন্সটল আছে সেগুলি স্ক্রল করতে করতে সেই অ্যাপ্লিকেশানটি খুঁজুন যেটি আপনি ইন্সটল করেননি। নিজে থেকেই তা ইন্সটল হয়ে গেছে। তারপর সেটার ওপর ট্যাপ করুন।
৪) এরপর “Uninstall” অপশন টি প্রেস করুন। যাতে এটি আপনার ফোন থেকে সরে যায় ।
৫) যদি “Uninstall” বাটন টি ডিসবেল থাকে বা এমম অবস্থায় থাকে যে আপনি সেটিতে ক্লিক করতে পারছেন না তাহলে যে অ্যাপ্লিকেশান টিতে এই সমস্যা হচ্ছে তার এডমিন এক্সেস বন্ধ করে দিন ।
এর জন্য ( settings >security >device > device administrator ) এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। এরপর এপ্লিকেশন টিকে ডিসেলেক্ট করুন। এবং আনইন্সটল করুন।
৬) এবার ফোনটিকে নোরম্যাল মোড়ে রিস্টার্ট করুন । এরপর ও যদি সমস্যা ঠিক না হয় তাহলে ফোনটিকে রি- সেটিং করুন।
Settings > system >reset options >Erase all data ( Factory Reset) । কিন্তু মনে রাখবেন ফ্যাক্টরি রিসেটে ফোন মেমরির যাবতীয় তথ্য নষ্ট হয়ে যায়।
সূত্র: টেকগাপ

এমন আল্লাহ ওয়ালাদের কদর করা কবে শিখবো!?

এমন আল্লাহ ওয়ালাদের কদর করা কবে শিখবো!?
একবারের জন্য পড়ার অনুরোধ রইলো,!
#মধুপুর_পীর_সাহেব_সম্পর্কে
এমন আল্লাহ ওয়ালাদের কদর করা কবে শিখবো!?
————————————————————-
গতকাল সকালে একমাত্র ছেলে মুহাম্মাদের মাদরাসায় সবক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাদের মিরপুরের “সেরেতাজ মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন সাহেবের” জবান থেকে কিছু নসিহত শুনতেছিলাম,! কথা তো নয়, মনে হয় যেন মুক্তো ঝড়তেছিলো,! হুজুর ছাত্রদেরকে বলতেছিলেন,!আরে ভাই কিতাবের মাঝেই পড়ে থাকো,! দেখবে মজা আর মজা,! এযে কি স্বাধ,! বাদশাহিতেও সেই মজা সেই স্বাধ নাই,! হযরত স্বল্পমেধাবী ছেলেদের কে উদ্দেশ্য করে বলতেছিলেন,ভাই কিতাব না বুঝে আসলেও কিতাব নিয়েই পড়ে থাকতে হবে,! একবার জনাবের সাথী বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি আলেম “মাওলানা ইসহাক ওবায়দী” #মধুপুরের_পীর_সাহেব_মাওলানা_আব্দুল_হামীদ সাহেবের ছাত্র জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুফতী দিলওয়ার সাহেবকে বলতেছিলেন,দেখ দেলোয়ার!!! যোগ্যতা বড় জিনিস নয়,! আল্লাহর কাছে মাকবুল হওয়াই বড় বিষয়,! জীবনে কত ছাত্রকে দেখেছি ক্লাসে ফাস্ট হতে, কতজন কত যোগ্যতার অধিকারী ছিলো, আজ তাদের কেউ কেউ দোকানদার কিংবা প্রবাসে ঝাড়ুদার,! আল্লাহ কবুল না করলে এই দশাই হয়,! আর দেখো,! এইযে, মধুপুরের বর্তমান পীর সাহেব আমাদের সাথে পড়াকালিন কোনো কিতাবই বুঝতেন না,! তবে সবসময় সময়ের কদর করে কিতাব নিয়েই পড়ে থাকতেন,! আর নোয়াখালির ওলামাবাজারের হযরত সহ আলেম উলামাদের প্রচুর খিদমাত করতেন,! আর আমলে-আখলাকে ছিলেন নম্র-ভদ্র, এককথায় খুবই শরীফ মেযাজের অধীকারি ছিলেন,আজ সেই কিতাব না বুঝা ছেলেটিই লক্ষ লক্ষ মানুষের পীর, শত শত মাদরাসার মুরুব্বী, মধুপুর মাদরসার প্রিন্সিপাল ও শাইখুল হাদিস, দুনিয়ার কত এমপি-মন্ত্রী এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট বি চৌধুরীও তাঁর দরবারে গিয়ে পড়ে থাকতেন,! একবার তো একমন্ত্রী তাঁর মাহফিলে আসার অনুমতি চেয়ে ফোন করলে তিনি সরাসরি বলে দিলেন,আসলে শর্ত হচ্ছে মঞ্চে বসতে পারবে না,! কারণ মঞ্চ শুধুমাত্র ওলামা হযরতদের জন্যই সংরক্ষিত,নিচে বসতে হবে,! ঠিক আছে হুজুর নিচেই বসবো,!তবুও আসবো,
আরেকবার হুজুরের গাড়ীর পিছনে এসে জনৈক মন্ত্রীর আগে যাওয়ার জন্য বারবার পিছন থেকে হর্ণ বাজালে হুজুর সাইড না দিয়ে গাড়ী থেকে নেমে এসে মন্ত্রীর গাড়ীকে থামিয়ে ধমকের সুরে ঐ মিয়া,! বারবার পিছন থেকে হর্ণ দিচ্ছেন কেন!? আপনার সময়ের দাম আছে,আমার সময়ের দাম নাই!? মন্ত্রী তো পুরোই লা-জবাব, অবশেষে মন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে বলতে বাধ্য হলেন,হুজুর আপনি আগে আগেই চলেন আমি আপনার পিছনে পিছনেই আসছি…!!
হে প্রিয় তালেবে ইলমরা!!! আজ মধুপুর পীরসাহেব কে দেখলে হাটহাজারীর আল্লামা আহমাদ শফী থেকে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সহ সমগ্র বাংলাদেশের আলেমরা কতইনা ইজ্জত এবং সম্মান প্রদর্শন করেন,! এগুলো সবই ইলম এবং আমলের ইজ্জত,! তাই বলছিলাম সর্বদা কিতাব নিয়েই পড়ে থাকবে!!! ছোট বড় যে কোনো গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে! আল্লাহ একদিন না একদিন এর বিনিময় দিবেনই দিবেন!!!!
মধুপুর পীরসাহেব সম্পর্কিত কথা গুলো মুফতী সাহেবের কাছ থেকে শুনতেছিলাম! আর ভাবতে ছিলাম! রাজনৈতিক কারণে হুজুরের সাথে কত সফর করেছি,কত কথা বলেছি,বারবার কাছ থেকে দেখছি,কিন্তু মুফতী সাহেব কিংবা মাওলানা ইসহাক ওবায়দী সাহেবের নজর দিয়ে তো কখনো দেখার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারিনি, আহা তাহলে কি আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এমন মহামূল্যবান হিড়কখন্ড গুলোর কদর করা আমরা এখনো শিখিনি!!!

বাদশাহ হারুনের দ্বীনদার ছেলে।

বাদশাহ হারুনের দ্বীনদার ছেলে।
 বাদশাহ হারুন উর রশীদ (রহঃ) একটি ছেলে ছিলো। তার ১৬ বছর বয়স ছিলো। সে অধিকাংশ সময় দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত ও বুযুর্গ লোকদের মজলিশে থাকত এবং প্রায় সময়ে কবরস্থানে চলে যেতো। সেখানে গিয়ে বলতোঃ

“তোমরা আমাদের পূর্বে দুনিয়াতে ছিলে। দুনিয়ার মালিক ছিলে। কিন্তু এই দুনিয়া তোমাদেরকে মুক্তি দেয় নাই।

অবশেষে তোমরা কবরে পৌছিয়ে গেছো। হায়! কোনভাবে যদি আমি জানতে পারতাম তোমাদের উপর কি অতিবাহিত হচ্ছে এবং তোমাদের সাথে কি কি সওয়াল জবাব হচ্ছে?” আর অধিকাংশ সময় এই কবিতা পাঠ করতঃ
﴿ترو عنی الجنا ٸز کل یوم “ٕ ویحزننی بکاء الناٸحات﴿
“আমাকে জানাযা প্রতিদিন ভয় দেখায় এবং মৃত্যুবরণকারীদের ওপর ক্রন্দনকারিনীদের আওয়াজ আমাকে চিন্তিত করিয়া রাখে।”

একদিন সে তার বাবা বাদশাহের মজলিশে আসলো। তার কাছে উজির আমির সকলেই উপস্থিত ছিলো। ছেলের গায়ে সাধারণ একটি কাপড় আর মাথায় একটি লুঙ্গী বাঁধা ছিলো। রাজ্যের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বলতে লাগলঃ

“এই পাগল ছেলটির কাজকর্ম আমীরুল মুমিনীনকে অন্যান্য বাদশাহের দৃষ্টিতে ছোট করে রেখেছে। আমীরুল মুমিনীন যেন তাকে সতর্ক করে দেন, তবে সে হয়তো তার অবস্থা পরিবর্তন করবে।

আমিরুল মুমিনীন এই কথা শুনিয়া ছেলেকে বললেনঃ “হে পুত্র! তুমি আমাকে লোকের দৃষ্টিতে ছোট করে রেখেছো।” সে এই কথা শুনে পিতাকে তো কোন জবাব দিল না;

কিন্তু একটি পাখি সেখানে বসে ছিলো, তাকে বললোঃ “ঐ মহান সত্তার দোহাই যিনি তোমাকে পয়দা করেছেন। তুমি আমার হাতের ওপর এসে বসে যাও।” সেই পাখিটি ঐখান থেকে উড়ে এসে তার হাতের ওপর বসে গেল।

তারপর বললোঃ “এখন তুমি তোমার জায়গায় ফিরে যাও।” পাখিটি তার হাত থেকে উড়ে নিজ জায়গায় বসে গেলো।

অতঃপর সে আরজ করলোঃ “হে আব্বাজান। দুনিয়ার প্রতি আপনার মহব্বত প্রকৃতপক্ষে আমাকে ছোট করে রেখেছে।

এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আপনার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাবো। এই বলে সে ঐখান থেকে রওয়ানা হয়ে গেল। শুধু এক জিলদ কুরআন শরীফ সঙ্গে নিলো। বিদায়ের সময় তার মা তাকে একটি মুল্যবান আংটি দিলেন।

(যাতে প্রয়োজনের সময় একে বিক্রী করে কোন কাজে লাগাতে পারে।) সে সেইখান থেকে রওয়ানা হয়ে বসরা শহরে পৌছালো এবং মজদুরদের সাথে কাজ করতে লাগলো।

সপ্তাহে একদিন শুধু শনিবার কাজ করতো আর আটদিন ঐ মজুরীর পয়সা খরচ করতো। এক দিরহাম ও এক দানিক (এক দিরহামের ৬ ভাগের এক ভাগ) মজুরী নিতো। অষ্টমদিন আবার শনিবার সে কাজ করতো।

আবু আমের বসরী (রহঃ) বলেনঃ “আমার একটি দেওয়াল পড়ে গিয়াছিলো। ঠিক করার জন্য আমি একজন মিস্ত্রীর সন্ধানে বের হলাম। (কেউ বললোঃ “এই ব্যাক্তিও নির্মাণের কাজ করে) আমি দেখলাম অত্যান্ত সুশ্রী একটি ছেলে বসে আছে। কাছে একটি খালি লোটা আছে এবং দেখে কুরআন শরীফ পড়িতেছে।

আমি বললামঃ “হে ছেলে! কাজ করবে? সে বলতে লাগলোঃ “কেন করবো না? কাজ করার জন্যই তো পয়দা হয়েছি। আপনি বলুন, আমার দ্বারা কি কাজ নিতে চান?” আমি বললামঃ “গাড়া মাটির নির্মানের কাজ নিবো।”

সে বললোঃ “এক দিরহাম ও এক দানিক মজুরী হবে এবং নামাজের সময় কাজ করবো না আমাকে নামাজের জন্য যেতে হবে।”

আমি তার উভয় শর্ত মঞ্জুর করলাম এবং তাকে নিয়া কাজে লাগিয়ে দিলাম। মাগরীবের সময় যখন আমি দেখলাম তখন সে দশজন লোকের কাজ করেছে।

আমি তাকে দুই দিরহাম মজুরী দিলাম সে শর্তের অধিক মজুরী নিতে অস্বীকার করলো এবং এক দিরহাম এক দানিক নিয়ে চলে গেল।

দ্বিতীয় দিন আমি আবার তার সন্ধানে বের হলাম কিন্তু আমি তাকে দেখতে পেলাম না। আমি লোকজনদের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম (যে, এইরকম চেহারা বিশিষ্ট একটি ছেলে মজদুরী করে, কারও কি জানা আছে যে, তাকে কোথায় পাবো?)

লোকজন বললো, সে শুধু শনিবার দিনই মজদুরী করে। এই দিনের আগে তুমি কোথাও তাকে খু্ঁজে পাবে না।

কাজ দেখে তার প্রতি আমার এইরকম আগ্রহ সৃষ্টি হলো যে, আমি আটদিন পর্যন্ত আমার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখলাম এবং শনিবার দিন আবার সন্ধানে বের হলাম।

আগের মতই তাকে বসে কুরআন শরীফ পাঠরত অবস্থায় পেলাম। সে আগের মত দুই শর্ত রাখলো। আমি মঞ্জুর করে নিলাম।

সে আমার সাথে এসে কাজে লেগে গেল। আমি এই ব্যাপারে অবাক হচ্ছিলাম যে, গত শনিবারে সে একা দশজন লোকের কাজ কিভাবে করলো। এইজন্য আমি এমনভাবে তাকিয়ে রইলাম যে, সে যেন আমাকে না দেখে। আমি তার কাজের অবস্থা দেখলাম।

আমি এই দৃশ্য দেখলাম যে, সে মাটির গাড়া নিয়ে দেয়ালের ওপর রাখে আর পাথর নিজে নিজেই একটি অপরটির সাথে লেগে যেতে থাকে।

আমার ইয়াক্বীন হয়ে গেল যে, সে আল্লাহর ওলী হবে আর আল্লাহর ওলীদের কাজে গায়েব থেকে সাহায্য হয়ে থাকে।

যখন সন্ধা হয়ে গেল তখন আমি তাকে তিন দিরহাম দিতে চাইলাম। সে তা নিতে অস্বীকার করে বললোঃ “আমি এতো দিরহামে কি করবো? সে এক দিরহাম এক দানিক নিয়ে চলে গেল।

আমি এক সপ্তাহ পুনরায় অপেক্ষা করলাম। তৃতীয় শনিবার আবার তালাশে বের হলাম। কিন্তু আমি তাকে পেলাম না। লোকদের জিজ্ঞাসা করলাম। এক ব্যাক্তি বললোঃ

“সে তিনদিন যাবৎ অসুস্হ অমুক নির্জন জঙ্গলে পড়ে আছে। আমি এক ব্যাক্তিকে বিনিময় দিয়ে রাজী করালাম যে, সে আমাকে ঐ জঙ্গলে পৌঁছে দিবে। সে আমাকে সঙ্গে নিয়ে ঐ বিরান জঙ্গলে পৌঁছালো। তখন আমি দেখলাম সে বেহুঁশ অবস্থায় পড়ে আছে।

একটি ইটের অর্ধেক টুকরা তার মাথার নিচে রহিয়াছে। আমি তাকে সালাম করলাম সে নিরব রইলো। আমি দ্বিতীয়বার সালাম করলাম সে চোখ খুললো এবং আমাকে চিনে ফেললো।

আমি তৎক্ষণাত তার মাথা ইটের ওপর থেকে নিয়ে আমার কোলে রাখলাম। সে সরিয়ে নিলো এবং মৃদুস্বরে কবিতার কয়েকটি চরণ পড়লো।
﴿یاصاحبی لاتغتربتنعم٭٭فاالعمرینفدوالنعم یزول٭
وذاحملت علی القبورجنازة٭فاعلم بانك بعدها محمول﴾
অর্থঃ “হে বন্ধু। দুনিয়ার নিয়ামত দ্বারা ধোকায় পড়িও না। জীবন শেষ হইতেছে আর এই নিয়ামত খতম হইয়া যাইবে। যখন তুমি কোন জানাযা লইয়া কবরস্থানে যাও তখন চিন্তা করিয়া থাকিও যে, এমনিভাবে তোমার জানাযা ও উঠানো হইবে।”

সে, আমাকে বললোঃ “হে আবু আমের! যখন আমার রুহ বের হয়ে যাবে তখন আমাকে গোছল দিয়ে আমার এই কাপড়েই আমাকে দাফন করিও।”

আমি বললাম “হে আমার প্রিয় এতে কি সমস্যা আছে যে, আমি আপনাকে নতুন কাফনের কাপড় পরাবো”?

সে বললঃ “নতুন কাপড়ে জীবিত লোককেই মানায়।”

হজরত আবু বকর (রাঃ) ও তার ইন্তেকালের পূর্বে এটাই বলেছিলেন যে, “আমার এই চাদরগুলোর দ্বারাই আমাকে দাফন করিও।” সকলে তাকে নতুন কাপড়ের অনুমতির কথা বলিলে তিনিও ঐ একই জবাব দিয়েছিলেন।

ছেলেটি বললোঃ “কাফন তো পুরাতন হোক বা নতুন তা একদিন পুরাতন হবেই। মানুষের সাথে শুধু তার আমল রয়ে যাবে”کمافی قوله
علیه السلام ًیتبع المیت ثلث اهله وماله وعمله فیرجع اثنان اهله وماله ویبقی معه واحد عمله” আর আমার এই লুঙ্গী ও লোটা কবর খননকারীকে দিয়ে দিবে আর এই কুরআন শরীফ ও আংটি হারুন-উর-রশীদ এর কাছে পৌছিয়ে দিও।

আর খেয়াল রেখ যে, তুমি নিজে তার হাতে দিবে এবং এই বলে দিবে যে, “এক পরদেশী ছেলের পক্ষ থেকে এটি আমার কাছে আমানত ছিলো।

সে আপনাকে এই কথা বলে দিয়েছে যে, “এমন যেন না হয় যে, এই গাফেলত ও ধোকার অবস্থাতেই আপনার মৃত্যু এসে যায়।”

এই পর্যন্ত বলতে বলতেই তার প্রাণ বের হয়ে গেল। তখন আমি জানতে পারলাম সে, শাহজাদা ছিলো।
সংগ্রহীত….