★★★ফিৎনা বাজ নায়েক ★★★

ডাক্তার জাকির নায়েক প্রকৃত ইসলামের দাঈ নন নতুন ধর্মমতের প্রবক্তা।
**********************
সাহাবীগণের বাই‘আত প্রসঙ্গে ডাক্তার জাকির নায়েকের মতবাদ হলো--
---------------------------------------------
-----------------------------------
“ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট সাহাবীগণ যে বাই‘আত গ্রহণ করতেন--এটা বর্তমানের ভোট বা ইলেকশন (নির্বাচন পদ্ধতি)-এর প্রাচীন রূপ। বস্তুত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ তা‘আলার রাসূলও ছিলেন এবং রাষ্ট্রের প্রধানও ছিলেন। তাই উক্ত বাই‘আত দ্বারা উদ্দেশ্য ছিলো--তাঁকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ভোট দেয়া। ”
(দ্রষ্টব্য : ইসলাম মেঁ খাওয়াতীন কে হুকূক, পৃষ্ঠা নং ৫০/ ডা. জাকির নায়ে

ক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ১, পৃষ্ঠা নং ৩৫০)
################ পর্যালোচনা ################
এটা ডাক্তার জাকির নায়েকের মহাভ্রান্তি। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট সাহাবীগণের বাই‘আত কিছুতেই গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভোট ছিলো না, বরং তা ছিলো রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট সাহাবীগণের দ্বীন পালনের অঙ্গীকার বিশেষ। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন--
ﯾٰۤﺎَﯾُّﮩَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﯽُّ ﺍِﺫَﺍ ﺟَﺎٓﺀَﮎَ ﺍﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨٰﺖُ ﯾُﺒَﺎﯾِﻌۡﻨَﮏَ ﻋَﻠٰۤﯽ ﺍَﻥۡ ﻟَّﺎ ﯾُﺸۡﺮِﮐۡﻦَ ﺑِﺎﻟﻠّٰﮧِ ﺷَﯿۡﺌًﺎ ﻭَّ ﻟَﺎ ﯾَﺴۡﺮِﻗۡﻦَ ﻭَ ﻟَﺎ ﯾَﺰۡﻧِﯿۡﻦَ ﻭَ ﻟَﺎ ﯾَﻘۡﺘُﻠۡﻦَ ﺍَﻭۡﻟَﺎﺩَﮨُﻦَّ ﻭَ ﻟَﺎ ﯾَﺎۡﺗِﯿۡﻦَ ﺑِﺒُﮩۡﺘَﺎﻥٍ ﯾَّﻔۡﺘَﺮِﯾۡﻨَﮧٗ ﺑَﯿۡﻦَ ﺍَﯾۡﺪِﯾۡﮩِﻦَّ ﻭَ ﺍَﺭۡﺟُﻠِﮩِﻦَّ ﻭَ ﻟَﺎ ﯾَﻌۡﺼِﯿۡﻨَﮏَ ﻓِﯽۡ ﻣَﻌۡﺮُﻭۡﻑٍ ﻓَﺒَﺎﯾِﻌۡﮩُﻦَّ ﻭَ ﺍﺳۡﺘَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﮩُﻦَّ ﺍﻟﻠّٰﮧَ ؕ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠّٰﮧَ ﻏَﻔُﻮۡﺭٌ ﺭَّﺣِﯿۡﻢٌ
“হে নবী! যখন মুমিনাগণ আপনার নিকট আসে এ বাই‘আত-অঙ্গীকার করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, যিনা করবে না, তাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, কোন অপবাদ আরোপ করবে না যা তারা চাক্ষুশভাবে বানায় এবং ভাল কাজে আপনার নাফরমানী করবে না, তাহলে তাদের বাই‘আত-অঙ্গীকার গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।”
(আল-কুরআন, সূরাহ মুমতাহিনা, আয়াত নং ১২)
সাহাবীগণ থেকে দ্বীন পালনের উপর এ বাই‘আত বা অঙ্গীকার বারবার নেয়া হয়েছে। সাহাবীগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এ পদ্ধতিতে দ্বীন পালনের অঙ্গীকার করেছেন। তা কিছুতেই গণতান্ত্রিক ভোট ছিলো না। সুতরাং তাকে বর্তমান যুগের গণতন্ত্রের নির্বাচন পদ্ধতির ভোট বলা মহা-অন্যায়।
(প্রমাণ : তাফসীরে মাজহারী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৩৭২ পৃষ্ঠা/ তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৮ম খণ্ড, ৯৬ পৃষ্ঠা)
বলা বাহুল্য, যারা গণতন্ত্রের হাকীকত সম্পর্কে ওয়াকিফহাল, তারা ভাল করেই জানেন যে, প্রচলিত গণতান্ত্রিক ভোট ব্যবস্থায় সকল ভোটারের এ ইখতিয়ার থাকে যে, সে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করার জন্য যাকে ইচ্ছা নিজের রায় প্রদান করবে অথবা ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকবে। অপরদিকে যদি কোন ব্যক্তির পক্ষে অধিকাংশের রায় না হয়, তাহলে তিনি রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হতে পারেন না। তাহলে সেই সাহাবীগণের কি ইখতিয়ার ছিলো যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সা.)কে ভোট প্রদান করা হতে বিরত থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রাষ্ট্রপ্রধান হওয়াকে মেনে নিতে অস্বীকার করবেন কিংবা রাসূলুল্লাহ (সা.) কি রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার জন্য তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের মুখাপেক্ষী ছিলেন? (নাউযুবিল্লাহ)
এতেই ডাক্তার জাকির নায়েকের উক্ত ভ্রান্ত থিউরির অসারতা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যায়। ডাক্তার জাকির নায়েক মনগড়াভাবে দ্বীনের বিষয়ের ব্যাখ্যা করে মারাত্মক ফিতনার সৃষ্টি করেছেন।

সূত্র:

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট